ঢাকা,শনিবার, ৪ মে ২০২৪

চকরিয়ায় কিশোর-কিশোরীর ভবিষ্যত গড়ার স্বপ্নে জাগরণী ফাউন্ডেশন

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::  হাতে কলমে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভা এলাকার মোট ৩২০ জন বেকার কিশোর-কিশোরীকে ভবিষ্যত জীবন গড়ার নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন জাগরণী ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। রোববার চকরিয়া উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষ মোহনায় জাগরণী ফাউন্ডেশন আয়োজিত নেটওয়ার্কিং কর্মশালায় প্রকল্পের লক্ষ্য উদ্দেশ্যে এবং গৃহিত কার্যক্রমের অগ্রগতি সর্ম্পকে অবহিতকরণ অনুষ্ঠানে আলোচকরা বিশদ বর্ণনা তুলে ধরেন।

জাতিসংঘের শিশু সুরক্ষা তহবিল ইউনিসেফ’র সার্বিক সহযোগিতায় ও অর্থায়নে ইতোমধ্যে জাগরণী ফাউন্ডেশন উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের শাহওমরাবাদ ও চকরিয়া পৌরসভার মগবাজার পয়েন্টে দুইটি কেন্দ্রের অধীনে উপকারভোগী বেকার কিশোর কিশোরীদেরকে টেইলারিং এন্ড ড্রেসমেকিং, ব্লকবুটিক ও মোবাইল সার্ভিসিং এর উপর প্রশিক্ষন দিয়ে দক্ষতা অর্জনে সহায়ক হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি কিশোরী কিশোরীদের জন্য সহায়ক শিক্ষা কর্মসুচির আওতায় জীবন দক্ষতা উন্নয়নে লেখাপড়া শিখতেও বিকল্প ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে কেন্দ্রগুলোতে।

জাগরণী ফাউন্ডেশন কাকারা কেন্দ্রের সভাপতি ও কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো.শওকত ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অঞ্জন চক্রবর্তী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চকরিয়া উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো.আবদুল মতিন, জাগরণী ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার (ইআরসি-এমপিসি) মো.আবদুল গনী, সাংবাদিক এম জিয়াবুল হক।

প্রকল্পের প্রকল্পের লক্ষ্য উদ্দেশ্যে এবং গৃহিত কার্যক্রমের অগ্রগতি সর্ম্পকে ধারণামুলক বক্তব্য দেন প্রশিক্ষক মো.রিয়াজুল ইসলাম ও প্রশিক্ষক মনসুরা হোসাইন। বক্তব্য দেন প্রকল্পের প্রোগ্রাম অর্গানাইজার বার্নাবাস বিশ্বাস, মো.ইমামুজ্জামান, কাউন্সিলর অনুরাধা সাহা।

অনুষ্ঠিত কর্মশালায় জাগরণী ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষক (ট্রেনিং অফিসার) মো.রিয়াজুল ইসলাম বলেন, জাতিসংঘের শিশু সুরক্ষা তহবিল ইউনিসেফ’র সার্বিক সহযোগিতায় জাগরণী ফাউন্ডেশন কক্সবাজার জেলার সাতটি উপজেলা যথাক্রমে চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী, কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় বেকার কিশোর কিশোরীদের জীবন দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছেন।

প্রকল্পের মার্ঠকর্মীরা প্রতিনিয়ত প্রভৃতি এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিশোর কিশোরী এবং পরিবার সদস্যদের উদ্বুদ্ধ করছেন। যার মধ্যদিয়ে ইতোমধ্যে প্রকল্পের অর্ধীনে বেকার কিশোর কিশোরীরা হাতে কলমে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে নিজেকে দক্ষমানব সম্পদ হিসেবে তৈরী করতে সফল হচ্ছেন।

তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভা এলাকায় দুইটি কেন্দ্রের মাধ্যমে মোট ৩২০ জন বেকার কিশোর-কিশোরীকে ভবিষ্যত জীবন গড়ার নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে জাগরণী ফাউন্ডেশন। একটি কেন্দ্রে ১৬০ জন করে মোট ৩২০ জন কিশোর কিশোরী ইতোমধ্যে টেইলারিং এন্ড ড্রেসমেকিং, ব্লকবুটিক ও মোবাইল সার্ভিসিং এর উপর প্রশিক্ষন দিয়ে দক্ষতা অর্জনে সহায়ক হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। উপকারভোগরীরা টানা ৬ মাস ধরে এই প্রশিক্ষনের আওতায় থাকবে। প্রশিক্ষণার্থীদের উপস্থিতি ৮০ শতাংশ বিবেচনায় প্রতিজনকে মাসিক উপবৃত্তি হিসেবে এক টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি কিশোরী কিশোরীদের জীবন দক্ষতা উন্নয়নে লেখাপড়া শিখতেও বিকল্প ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে কেন্দ্রগুলোতে।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, সমাজে পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠি তথা বেকার কিশোর কিশোরীদের জীবনদক্ষতা উন্নয়নে জাগরণী ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি বলেন, অল্প পরিসরে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হলে বেশিরভাগ জনগোষ্ঠি প্রকল্পের সুফল থেকে বঞ্চিত হবে, সেইজন্য উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে এই কার্যক্রম চালু করা গেলে বেকার সমস্যার অভিশাপ থেকে মুক্ত হবে বিশাল জনগোষ্টি।

তিনি বলেন, ৬ মাস প্রশিক্ষণের মেয়াদ থাকলেও প্রকল্পের অধীনে তাদেরকে কমপক্ষে একবছর মনিটরিং করা দরকার। তারা কী ভাবে কর্মসংস্থান পেলো বা কেউ আর্থিকসহ নানা সংকটে আছেন কী না তাও তদারক করা প্রয়োজন। সর্বোপুরি প্রশিক্ষন শেষে কিশোর কিশোরী যারা পারিবারিকভাবে দৈন্যদশায় আছেন, তাদেরকে প্রনোদনা দেওয়া গেলে সফল হবার পথে অনেকদুর এগিয়ে যাবে। তাই সুপারিশগুলোর আলোকে প্রকল্পের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক এই প্রত্যাশা করি। ###

 

পাঠকের মতামত: